রাশিয়ার কৃষি এবং গ্রামীণ জীবনযাত্রা এক জটিল এবং বহুমাত্রিক বিষয়। বিশাল এই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রকৃতির ভিন্নতা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে কৃষিকাজের ধরনে পার্থক্য। কোথাও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশাল শস্যক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, আবার কোথাও পুরনো দিনের পদ্ধতিতে ছোট ছোট জমিতে ফসল ফলানো হয়। গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির উপর কৃষির প্রভাব অপরিসীম। আধুনিকীকরণ এবং বিশ্বায়নের যুগে রাশিয়ার কৃষিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে, যার প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ সমাজে।আমি নিজে যখন রাশিয়ার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরেছি, দেখেছি কীভাবে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে জীবন ধারণ করে। তাদের সরল জীবনযাত্রা, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে। তবে আধুনিক জীবনের হাতছানি গ্রামীণ জীবনেও পরিবর্তন আনছে। এই পরিবর্তনগুলো কীভাবে তাদের জীবনকে প্রভাবিত করছে, তা জানতে আমার আগ্রহ ছিল।আসুন, নিচের অংশে গ্রামীণ জীবনযাত্রা এবং রাশিয়ার কৃষি সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক। আমরা চেষ্টা করব এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে বুঝতে এবং জানাতে।
রাশিয়ার কৃষিতে প্রকৃতির প্রভাব
জলবায়ুর ভূমিকা
রাশিয়ার বিশাল ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধরনের জলবায়ু বিদ্যমান। উত্তরের শীতল তুন্দ্রা অঞ্চল থেকে দক্ষিণের উষ্ণ স্তেপ অঞ্চল পর্যন্ত জলবায়ুর এই ভিন্নতা কৃষিকাজের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। শীতকালে দীর্ঘ সময় ধরে বরফ জমে থাকার কারণে অনেক অঞ্চলে ফসল ফলানো কঠিন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না পাওয়ায় ফসলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এই কারণে রাশিয়ার কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ফসল উৎপাদন করে থাকে।
ভূ-প্রকৃতির প্রভাব
রাশিয়ার ভূ-প্রকৃতিও কৃষিকাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে উর্বর সমভূমি রয়েছে, যেখানে প্রচুর পরিমাণে শস্য উৎপাদন হয়। তবে পূর্বাঞ্চলে রয়েছে পার্বত্য অঞ্চল, যেখানে কৃষিকাজ করা কঠিন। সাইবেরিয়ার মতো অঞ্চলে জমি পাথুরে ও অনুর্বর হওয়ায় কৃষিকাজ প্রায় অসম্ভব। এই কারণে রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়, যা স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি যখন রাশিয়ার ভোলগা নদীর তীরে গিয়েছিলাম, দেখেছিলাম সেখানকার জমি কত উর্বর আর সেখানে কী সুন্দর ফসল ফলে।
মাটির গুণাগুণ
রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির গুণাগুণ ভিন্ন ভিন্ন। পশ্চিমাঞ্চলের কৃষ্ণ মৃত্তিকা (Chernozem soil) বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর মাটি হিসেবে পরিচিত। এই মাটিতে প্রচুর পরিমাণে হিউমাস থাকায় এটি শস্য উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। কিন্তু রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে পডজল (Podzol) মাটি দেখা যায়, যা অ্যাসিডিক এবং কম উর্বর। এই মাটিতে ফসল ফলাতে হলে সার ব্যবহার করতে হয়। মাটির এই ভিন্নতার কারণে রাশিয়ার কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে ফসল ফলান।
গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি: কৃষিকাজ
কর্মসংস্থান সৃষ্টি
কৃষিকাজ রাশিয়ার গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। দেশের বহু মানুষ সরাসরি কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ছোট এবং মাঝারি আকারের খামারগুলো গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখে এবং স্থানীয় মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করে। কৃষিকাজ শুধু ফসল উৎপাদন নয়, এর সঙ্গে পশুপালন, মৎস্য চাষ এবং অন্যান্য কৃষিভিত্তিক শিল্পও জড়িত।
আয় বৃদ্ধি
কৃষিকাজ গ্রামীণ মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। ভালো ফসল হলে কৃষকদের আয় বাড়ে, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক। কৃষিপণ্য বিক্রি করে তারা শুধু নিজেদের পরিবারের ভরণপোষণ করে না, স্থানীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও সহায়তা করে।
জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন
কৃষিকাজ গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষিকাজের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তারা ভালো খাবার, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পায়। গ্রামীণ এলাকায় স্কুল, হাসপাতাল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোর উন্নতিতে কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। আমি দেখেছি, অনেক কৃষক তাদের সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়ানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন।
আধুনিক প্রযুক্তি ও রাশিয়ার কৃষি
যান্ত্রিকীকরণ
রাশিয়ার কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ট্রাক্টর, কম্বাইন হারভেস্টার এবং অন্যান্য কৃষিযন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকরা দ্রুত এবং সহজে কাজ করতে পারছেন। এর ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ফসলের অপচয় কমেছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা সঠিকভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন।
ডিজিটাল কৃষি
ডিজিটাল কৃষি রাশিয়ার কৃষকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। স্যাটেলাইট ইমেজ, ড্রোন এবং সেন্সর ব্যবহার করে কৃষকরা জমির স্বাস্থ্য, ফসলের অবস্থা এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে জানতে পারছেন। এই তথ্য ব্যবহার করে তারা সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করতে এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকরা তাদের উৎপাদন খরচ কমাতে এবং ফলন বাড়াতে সক্ষম হচ্ছেন।
জৈবপ্রযুক্তি
জৈবপ্রযুক্তি রাশিয়ার কৃষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিজ্ঞানীরা উন্নত জাতের বীজ তৈরি করছেন, যা রোগ প্রতিরোধী এবং বেশি ফলন দেয়। এই বীজগুলো ব্যবহার করে কৃষকরা কম খরচে বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। এছাড়াও, জৈব সার এবং কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
| বিষয় | বর্ণনা |
|---|---|
| জলবায়ু | বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের জলবায়ু (তুন্দ্রা, স্তেপ)। |
| ভূ-প্রকৃতি | উর্বর সমভূমি থেকে পার্বত্য অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। |
| মাটি | কৃষ্ণ মৃত্তিকা (চেরনোзем) থেকে পডজল মাটি পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার। |
| কর্মসংস্থান | গ্রামীন মানুষের জন্য প্রধান কর্মসংস্থান। |
| আয় | কৃষি গ্রামীণ মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। |
| প্রযুক্তি | যান্ত্রিকীকরণ, ডিজিটাল কৃষি, এবং জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার। |
রাশিয়ার গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
ঐতিহ্যবাহী উৎসব
রাশিয়ার গ্রামীণ সংস্কৃতিতে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী উৎসব পালন করা হয়। এসব উৎসবের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো মাসলেনিতসা (Maslenitsa), যা শীতের শেষ এবং বসন্তের শুরুতে পালিত হয়। এই উৎসবে মানুষ গান-নাচ করে, ঐতিহ্যবাহী খাবার খায় এবং বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নেয়। এছাড়াও, ইভান কুপালা (Ivan Kupala) নামের একটি উৎসব আছে, যা গ্রীষ্মকালে পালিত হয়। এই উৎসবে তরুণ-তরুণীরা আগুন জ্বালিয়ে তার ওপর দিয়ে লাফ দেয় এবং নদীতে স্নান করে।
লোকসংগীত ও নৃত্য
রাশিয়ার গ্রামীণ সংস্কৃতিতে লোকসংগীত ও নৃত্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব লোকসংগীত ও নৃত্যশৈলী রয়েছে, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। এসব গান ও নৃত্যের মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষ তাদের জীবনযাত্রা, প্রেম, প্রকৃতি এবং ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো তুলে ধরে। আমি যখন রাশিয়ার গ্রামে একটি লোকসংগীত অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, তখন সেখানকার মানুষের আবেগ ও সংস্কৃতি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প
রাশিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করা হয়, যা তাদের সংস্কৃতির অংশ। কাঠের কাজ, মৃৎশিল্প, বস্ত্রশিল্প এবং সূচিকর্মের মাধ্যমে তারা তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করে। রাশিয়ার বিখ্যাত ম্যাট্রিয়শকা পুতুল (Matryoshka dolls) এবং খোখলোমা (Khokhloma) কাঠের কারুকার্য সারা বিশ্বে পরিচিত। এই হস্তশিল্পগুলো শুধু তাদের ঐতিহ্য নয়, গ্রামীণ অর্থনীতিরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
গ্রামীণ জীবনে আধুনিকতার ছোঁয়া
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রসার
রাশিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রসার ঘটছে। সরকার গ্রামীণ এলাকায় স্কুল ও হাসপাতাল নির্মাণ করছে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এর ফলে গ্রামীণ শিশুরা ভালো শিক্ষা পাচ্ছে এবং মানুষজন উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার মানুষজন শহরের সুযোগ-সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি
রাশিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। নতুন রাস্তাঘাট তৈরি হওয়ার কারণে গ্রামের মানুষ সহজে শহরে যাতায়াত করতে পারছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাড়ার কারণে তারা বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হতে পারছে। এর ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে নতুন পরিবর্তন আসছে।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
আধুনিকতার ছোঁয়ায় রাশিয়ার গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন আধুনিক পোশাক পরছে, নতুন খাবার খাচ্ছে এবং বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যমে অংশ নিচ্ছে। তবে তারা এখনও তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছে। গ্রামীণ মানুষ আধুনিক জীবন এবং ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির মধ্যে একটি সুন্দর সমন্বয় ঘটিয়েছে।
রাশিয়ার কৃষিতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ু পরিবর্তন রাশিয়ার কৃষির জন্য একটি বড় হুমকি। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা এবং বন্যার কারণে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই রাশিয়ার কৃষকদের জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
ভূমি ক্ষয়
রাশিয়ার অনেক অঞ্চলে ভূমি ক্ষয়ের কারণে উর্বরতা কমে যাচ্ছে। অতিরিক্ত চাষাবাদ এবং বনভূমি ধ্বংসের কারণে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ভূমি ক্ষয় রোধ করতে হলে কৃষকদের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে এবং জমিতে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।
কৃষি উপকরণের অভাব
রাশিয়ার কিছু গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষি উপকরণের অভাব রয়েছে। ভালো বীজ, সার এবং কীটনাশকের অভাবে কৃষকরা পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। সরকার কৃষকদের জন্য ভর্তুকি এবং ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে, যাতে তারা প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে পারেন।
সম্ভাবনা
রাশিয়ার কৃষিতে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটির বিশাল ভূমি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ কৃষিকাজের জন্য খুবই উপযোগী। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান খাদ্য উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। সরকারের উচিত কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা, যাতে তারা তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারেন।রাশিয়ার কৃষিতে প্রকৃতির প্রভাব এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার গ্রামীণ অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে যে পরিবর্তন এনেছে, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাশিয়া কিভাবে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। আশা করি, এই আলোচনা রাশিয়ার কৃষি এবং গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দিতে পেরেছে।
শেষ কথা
রাশিয়ার কৃষি এবং গ্রামীণ জীবনের এই আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম, দেশটির কৃষকরা প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে কিভাবে ফসল উৎপাদন করেন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাশিয়া কিভাবে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। আশা করি, এই আলোচনা রাশিয়ার কৃষি এবং গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দিতে পেরেছে।
এই ব্লগটি পড়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। যদি আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকে, তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আবার দেখা হবে, নতুন কোনো বিষয় নিয়ে। ভালো থাকবেন।
দরকারী তথ্য
১. রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে কৃষ্ণ মৃত্তিকা (Chernozem soil) বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর মাটি হিসেবে পরিচিত।
২. ডিজিটাল কৃষি রাশিয়ার কৃষকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। স্যাটেলাইট ইমেজ, ড্রোন এবং সেন্সর ব্যবহার করে কৃষকরা জমির স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে পারছেন।
৩. রাশিয়ার বিখ্যাত ম্যাট্রিয়শকা পুতুল (Matryoshka dolls) এবং খোখলোমা (Khokhloma) কাঠের কারুকার্য সারা বিশ্বে পরিচিত।
৪. মাসলেনিতসা (Maslenitsa) রাশিয়ার একটি জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী উৎসব, যা শীতের শেষ এবং বসন্তের শুরুতে পালিত হয়।
৫. আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রাশিয়ার গ্রামীণ মানুষজন শহরের সুযোগ-সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
রাশিয়ার জলবায়ু এবং ভূ-প্রকৃতি কৃষিকাজের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
কৃষিকাজ গ্রামীণ মানুষের আয়ের প্রধান উৎস এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়ক।
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকরা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেন।
ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি রাশিয়ার গ্রামীণ জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভূমি ক্ষয় রাশিয়ার কৃষির জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: রাশিয়ার কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কতটা?
উ: সত্যি বলতে কী, রাশিয়ার কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, তবে সব জায়গায় সমান নয়। বড় বড় খামারগুলোতে ট্রাক্টর, কম্বাইন হারভেস্টার, ড্রোন ইত্যাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ছোট কৃষকরা এখনও পুরনো পদ্ধতিতেই চাষাবাদ করেন। আমি নিজের চোখেই দেখেছি, কোথাও অত্যাধুনিক মেশিন দিয়ে গম কাটা হচ্ছে, আবার কোথাও গরুর লাঙল দিয়ে জমি চাষ করা হচ্ছে।
প্র: রাশিয়ার গ্রামীণ জীবনে কী ধরনের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে?
উ: গ্রামীণ জীবনে অনেক পরিবর্তন আসছে। আগেকার দিনে মানুষজন যৌথ পরিবারে থাকত, এখন ছোট পরিবার বাড়ছে। গ্রামের যুবকেরা কাজের জন্য শহরে চলে যাচ্ছে, ফলে গ্রামে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবে ইন্টারনেটের কল্যাণে গ্রামের মানুষ এখন অনেক বেশি তথ্য পাচ্ছে এবং বাইরের জগতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আমি যখন গ্রামে গিয়েছিলাম, দেখেছি অনেক বাড়িতেই স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে।
প্র: রাশিয়ার কৃষিকাজ কি পরিবেশের উপর কোনো প্রভাব ফেলে?
উ: হ্যাঁ, অবশ্যই ফেলে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি দূষিত হচ্ছে। আবার বনভূমি ধ্বংস করে কৃষিজমি তৈরি করার কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তবে এখন অনেক কৃষক জৈব সার ব্যবহার করে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে চাষ করার চেষ্টা করছেন। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে পরিবেশের কথা ভেবে কৃষিকাজ করা হবে।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
